খুবির সিএসই ডিসিপ্লিনে দু’দিনব্যাপী জাতীয় সিম্পোজিয়ামের সমাপনী
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ডিসিপ্লিন আয়োজিত ‘ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবরেশন ফর আইসিটি-এনাবলড্ বাংলাদেশ’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী জাতীয় সিম্পোজিয়াম সমাপ্ত হয়েছে। আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) রাত ৮টায় ড. সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনের ইউআরপি লেকচার থিয়েটারে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম।
এ সময় তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত আমরা যা শিখছি, তা দৃশ্যমান হওয়া প্রয়োজন। এজন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উদ্ভাবনীশক্তি রয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে তাদের উদ্ভাবনাগুলো সকলের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে এ ধরনের সিম্পোজিয়াম/সম্মেলন। কারণ, সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে তাদের নিজেদের সক্ষমতা প্রকাশের সুযোগ তৈরি হয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের সামনে দেশকে অনেক কিছু দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। দেশের স্বার্থে এ ধরনের প্রতিযোগিতা আরও বেশি আয়োজন করা উচিত। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আলোকে প্রোগ্রাম নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তাহলে তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে নতুন নতুন গবেষণা, উদ্ভাবনা ও ধারণাগুলো উঠে আসবে।
উপাচার্য এ ধরনের প্রতিযোগিতামূলক আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে সফলতার মাধ্যমে এ সিম্পোজিয়াম শেষ করায় সিএসই ডিসিপ্লিন ও ক্লাস্টার ক্লাব এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দল ও বিচারকসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। পরে তিনি বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
সিম্পোজিয়াম আয়োজন কমিটির চেয়ার ও ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও অতিথি বক্তব্য রাখেন আয়োজন কমিটির উপদেষ্টা প্রফেসর ড. রামেশ্বর দেবনাথ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিম্পোজিয়াম আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. কাজী মাসুদুল আলম। এ সময় অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. কামরুল হাসান তালুকদার ও প্রফেসর ড. এস এম রফিজুল হক। বিচারকদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন সিএসই ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. জিএম আতিকুর রহমান। ক্লাস্টার ক্লাবের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ইশতিয়াক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী সাকিব মাহমুদ শোভন ও সুমাইয়া আক্তার। এ সময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দু’দিনব্যাপী এ সিম্পোজিয়াম ‘সিম্পোজিয়াম টক’, ‘ইনোভেশন শোকেসিং’, ‘প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’ এবং ‘ডেটাথন’ শীর্ষক চারটি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। ‘সিম্পোজিয়াম টক’ পর্বে দেশের স্বনামধন্য ৮টি প্রতিষ্ঠানের ৮ জন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তাদের জ্ঞানগর্ভমূলক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
‘ইনোভেশন শোকেসিং’ পর্বে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৫০টির অধিক আইডিয়া ও গবেষণা পোস্টার প্রেজেন্টেশন করেন। এর মধ্য থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ‘ট্রুসাইট’ চ্যাম্পিয়ন, টিম ‘পিপীলিকা’ প্রথম রানার আপ এবং টিম ‘হারকিউলিস’ দ্বিতীয় রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
‘প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’ পর্বে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৪৭টির টিম অংশগ্রহণ করে। এর মধ্য থেকে কুয়েটের টিম ‘কোড মনকিস’ চ্যাম্পিয়ন, যবিপ্রবির টিম ‘জাস্ট ফ্লার’ প্রথম রানার আপ, কুয়েটের টিম ‘ব্রুটফোর্স নাইটস’ দ্বিতীয় রানার আপ, কুয়েটের টিম ‘কুয়েট স্পার্টা’ তৃতীয় রানার আপ এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ‘কেইউ এরোরমেকার’ চতুর্থ রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এর হ্যাকাথন প্রতিযোগিতা ‘ডেটাথন’ ৩৬ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। এখান থেকে চূড়ান্ত পর্বে ১৬টি টিম তাদের এলগোরিদম উপস্থাপন করে। যার মধ্য থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ‘প্যারাডক্স’ চ্যাম্পিয়ন, বুয়েটের টিম ‘বুয়েট টিওসি’ প্রথম রানার আপ এবং নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির টিম ‘এনডব্লিউইউ ক্লাসিফায়ার’ দ্বিতীয় রানার হওয়ার গৌরব অর্জন করে।