
আজ ৮ জানুয়ারি (শনিবার) বেলা দশটায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি স্ট্র্যাটেজি এন্ড অ্যানুয়াল পারফর্মেন্স এগ্রিমেন্ট: ফর্মুলেশন এন্ড ইমপ্লিমেন্টেশন শীর্ষক এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং বিষয়বস্তুর বিভিন্ন দিকে আলোকপাত করে একটানা সাড়ে চারঘণ্টা বিশ্লেষণমূলক বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের। তিনি বলেন, সরকার জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল এবং বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নের ওপর সবিশেষ গুরুত্বরোপ করছে। কারণ, দেশে ইতোমধ্যে অর্থনৈতিকসহ সামগ্রিক যে অগ্রগতির ধারা সূচিত হয়েছে তা টেকসই করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তির শুদ্ধাচারচর্চা জরুরি। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং দুর্নীতি দমন এখন সকল ক্ষেত্রে গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। কেননা উদীয়মান অর্থনীতি ও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রমঅগ্রসরমান। দেশের মেগা প্রকল্পসমূহের কাজ শেষ হলে সকল ক্ষেত্রে গতিশীলতা আরও বাড়বে। কিন্তু এই অর্জন টেকসই করা এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে এই প্রয়োজনমুখী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির গুরুদায়িত্ব নিতে হবে। এজন্য জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা এখন সময়ের দাবি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল এবং বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন। এ লক্ষ্যে এর বিভিন্ন কর্মকৌশল সর্ম্পকে সম্যক ধারণা অর্জন ও চর্চার কলাকৌশল রপ্ত করার ওপর তিনি জোর দেন। তিনি বলেন, নিকট ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দক্ষতার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। র্যাকিং হবে। শিক্ষকদের জন্য অভিন্ন নীতিমালা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যও অভিন্ন নীতিমালা আসবে। এমনকি অভিন্ন অর্থনৈতিক নীতিমালাও আসতে পারে। সরকার ও ইউজিসির লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সহায়তা করা। ইউজিসি সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ইতোমধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। এটাকে আরও গতিশীল, টেকসই করতে যুগোপযোগী ধারায় নিয়ে যেতে আরও দক্ষতা ও উৎকর্ষ অর্জন প্রয়োজন।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে এখনও যা কিছু দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন সেদিকে জোর দেওয়া হয়েছে। আজকের এ কর্মশালা থেকে অনেক দিক-নির্দেশনা পাওয়া গেছে যা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে কর্মসূচি গ্রহণে সহায়ক হবে। তিনি ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম খচিত একটি ক্রেস্ট উপহার দেন। কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিএ টিমের প্রধান রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসি এর পরিচালক প্রফেসর ড. সারোয়ার জাহান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইকিউএসি অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান, এপিএ টিম এবং ইনোভেশন টিমের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী।