Khulna University News

গত এক বছরের ব্যবধানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাসহ সার্বিক উন্নয়নে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তিনি গতরাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে মুক্তমঞ্চে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। এই সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং সরকার তথা শিক্ষামন্ত্রণালয়, ইউজিসি ছাড়াও স্থানীয় সকলমহলের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন। গত এক বছরে পিএইচডি প্রোগ্রামে ৮৫জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার রেকর্ড উল্লেখ করে বলেন এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। কারণ, গবেষণাই হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলশক্তি। তাঁর দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে তিনি গবেষণামুখী পরিবেশ সৃষ্টিতে নানামুখী প্রচেষ্টা ও পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উদ্যম ও আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এক বছরে ৮০০টি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এটাও উল্লেখযোগ্য এবং গতবছরের চেয়ে তা অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। একই বছরে ১১০টি বেশি গবেষণা প্রকল্প শেষ হয়েছে এবং আরও দুইশতটির কাজ চলমান রয়েছে। একই বছরে বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাসংস্থার সাথে যৌথ শিক্ষা ও গবেষণা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী বিনিময়ে ১৮টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে বলেও জানানো হয়। গত এক বছরের মধ্যে ৪টি আন্তর্জাতিক সেমনিার অনুষ্ঠানও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কেরিয়ার ফেয়ার, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য প্রশিক্ষণ, ই-নথি চালুর প্রস্তুতি এবং ভৌত উন্নয়নে গত বছরের ১৮% কাজের অগ্রগতির স্থলে এবছর তা ৫২%এ উন্নীত হওয়ার মতো অগ্রগতির কথাও তুলে ধরা হয়। উপাচার্য সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সাফল্য ধরে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক তথ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন উপাচার্য। এসময় উপ-উপাচার্য ছাড়াও ডিনবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। গত একবছরে শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, মানবতার সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমে অবদান রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন, দলগত ও ব্যাক্তিগত পুরস্কার প্রদান করা হয়। সংগঠনের মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন, সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে কৃষ্টি, স্বেচ্ছাসেবায় রোটার‌্যাক্ট ক্লাব অব খুলনা ইউনিভার্সিটি এ পুরস্কার পায়। এর আগে সন্ধ্যায় শহিদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, স্কুলভিত্তিক গবেষণাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের পোস্টার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উপাচার্য। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও আমন্ত্রিত শিল্পীরা সঙ্গিত পরিবেশন করেন। সবমিলিয়ে এবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন ছিলো উৎসবমুখর এবং তা সবার মধ্যে বিপুল উদ্দীপনা তৈরি করে। এ উপলক্ষে এদিন সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপন করা হয়। সকাল ১০.১৫ মিনিটে এ উপলক্ষ্যে প্রথমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল কালজয়ী মুজিব ও পরে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এরপর হাদী চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। রাতে আলোকসজ্জায় উদ্ভাসিত ছিলো ক্যাম্পাস।