
খুবিতে নবীন শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ওরিয়েন্টেশনের চতুর্থ দিন অতিবাহিত
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ‘উইক অব ওয়েলকাম’ শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক ওরিয়েন্টেশনের চতুর্থ দিন অতিবাহিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৯.৩০ মিনিটে ওরিয়েন্টেশনের তৃতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত এ ওরিয়েন্টেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানোর যাত্রা শুরু হয়েছে। এখান থেকেই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তোমাদের তৈরি হতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি কো-কারিকুলা ও এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসের মাধ্যমে নিজেকে বিকশিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে শিক্ষার্থীরা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে কোর্স রেজিস্ট্রেশন ফি পুনঃনির্ধারণে উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশে কোর্স রেজিস্ট্রেশন ফি পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি সকল শিক্ষার্থীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোর্স রেজিস্ট্রেশন করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানান।
শিক্ষার্থীদের আগামী দিনে দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, শিক্ষা হচ্ছে একটি বিনিয়োগ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীপ্রতি সরকার প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় করে। কোর্স রেজিস্ট্রেশন ফির মাধ্যমে অন্যান্য অনুষ্ঠান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষার্থীসংশ্লিষ্ট কর্মসূচি পালন করা হয়ে থাকে। তাই শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে কোর্স রেজিস্ট্রেশন ফি পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। যেন তা শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে থাকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
এর আগে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথা অনুসারে নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উক্ত শপথবাক্যে সন্ত্রাস, ছাত্ররাজনীতি, র্যাগিং ও মাদককে না বলার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান। তিনি বলেন, মৌলিক কিছু পার্থক্যের কারণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য। এখানে ছাত্ররাজনীতি ও সেশনজট নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের কোর্স সম্পন্ন করতে পারে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন হচ্ছে নিজেকে তৈরি করার সময়। তাই শুরু থেকেই পড়াশোনার প্রতি মনযোগী হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-শৃঙ্খলা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নূর আলম, কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান কবীর। আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. সালাউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে উপাচার্য রিসোর্স পারসন হিসেবে ‘কপিং এন্ড থ্রাইভিং ইন হায়ার এডুকেশন এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক একটি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন। এতে তিনি ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট’, ‘কমিটমেন্ট’, ‘পারসোনাল এন্ড একাডেমিক গোলস’, ‘বিল্ডিং সোশ্যাল কানেকশন’, ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ এবং ‘ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্টস’ বিষয়ে আলোকপাত করেন।
এ ছাড়াও আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. শামীম আহসান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুর রউফ, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সাঈদা রেহানা রিসোর্স পারসন হিসেবে টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন মুদ্রিত সমন্বিত প্রসপেক্টাস বিতরণ করা হয়। ওরিয়েন্টেশনের চতুর্থ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি, বাংলা, ইতিহাস ও সভ্যতা, ব্যবসায় প্রশাসন এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের নবাগত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।